তিন মেট্রিক টন আম ইংল্যান্ডের উদ্দেশে পাঠানো হলো। তারা নিজ খরচে বাগান থেকে কাভার্ডভ্যানে করে এই আম অতিযত্নসহকারে ঢাকায় নিয়ে যাবেন। পরে তারাই আম পাঠাবেন। রোববার পাঠানো আমগুলো সবই ক্ষিরসাপাত (হিমসাগর)। প্রথম চালানে সফলতা আসলে পর্যায়ক্রমে আরও আম পাঠানো হবে। রাজশাহীর পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মঞ্জুর-এ-মাওলা, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক আমগুলো পরীক্ষা করে প্রত্যয়নপত্র দেন, বলেন আনোয়ারুল হক।
রাজশাহীর পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মঞ্জুর-এ-মাওলা বলেন, গাছ থেকে নামানোর পর তারা আমগুলো পরখ করে দেখেন। মূলত ফ্রুট ব্যাগিং করা আমগুলো কোনো ধরনের কীটনাশক স্প্রে ছাড়া বিষমুক্ত। এই আমের গুণগতমান অনেক ভালো এবং সুস্বাদু। এই পদ্ধতির মাধ্যমে আমের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। এরপরও বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে বলে বাড়তি সাবধানতা হিসেবে ফ্রুট ব্যাগিং করা আম নামানোর পর তারা বাগানে যান। এ সময় আমগুলো পরখ করে দেখেন। যেগুলো রপ্তানি উপযোগী, সেগুলো বাছাই করে অন্যগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য আলাদা করে দেন তারা।
এরপরও রপ্তানিকারকের মাধ্যমে ঢাকায় যাওয়ার পর কৃষি অধিদপ্তরের অধীনে থাকা উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধকেন্দ্রের ল্যাবে এই আমগুলো আবারও পরীক্ষা করা হবে। সেখানে প্রথমে দেখা হবে আমগুলো পাকা কিনা এবং পোকা-রোগমুক্ত ও পচা কিনা। এরপর সেখানকার ল্যাবেই আমগুলোর ফরমালিন, ব্রিক্স, পি-এইচসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রাসায়নিক পরীক্ষা করা হবে। এরপরই মিলবে চূড়ান্ত প্রত্যয়ন। খুব কম সময়েই পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন হয়। এ জন্য রপ্তানিকারকদের সমস্যা হয় না। দেশের সুনাম রক্ষার স্বার্থে সরকারি নির্দেশে এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই আম রপ্তানি করতে হয় বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নের জবাবে কৃষি কর্মকর্তা মঞ্জুর-এ-মাওলা বলেন, আম গবেষণা কেন্দ্রে দুই বছর ধরে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিতে প্রায় ১৮ জাতের আমের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। শেষে ব্যাপক সফলতা পাওয়ায় দুই বছর আগে আমচাষিদের জন্য বাণিজ্যিকভাবে এটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ৪০-৫০ দিন ব্যাগিং করার পর গাছ থেকে ভাঙা হয়। এই আম সংগ্রহের পর ১০-১৫ দিন পর্যন্ত অনায়াসেই সংরক্ষণ করে সেটা খাওয়া যায়। এখানে আম ভাঙার পর দ্রুত নষ্ট হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
এর আগে গত দুই বছর থেকে ইংল্যান্ডে রপ্তানি করা হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফ্রুট ব্যাগিং করা আম। গত বছরের ৮ জুন ৩ মেট্রিক টন ক্ষিরসাপাত আম রপ্তানির মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বছরে পা রাখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। চলতি বছরও এই প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আম মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। তবে রাজশাহী থেকে এবারই প্রথম পাঠানো হলো ফ্রুট ব্যাগিং করা আম।
http://www.jaijaidinbd.com/