x 
Empty Product

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

ফলের বাজারে গেলে আমের ঘ্রানে অনেকেই স্তম্ভিত হয়ে যান কোন আম কিনবেন? বাজারে থরে থরে সাজানো পাকা আম। কিন্তু, কোনটা বেশি স্বাদযুক্ত বা কোনটা বেশি মিষ্টি সে দ্বিধাবোধ সকলেরই থাকে |

তাই এই নিবন্ধে আমের কয়েকটি উন্নত জাত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো;
আমের জাত (Mango varieties):

প্রতিটি জাতের আমের চেহারা, রং, রূপ, ঘ্রাণ, স্বাদ একে অন্যের থেকে আলাদা। ক্ষীরভোগ, মোহনভোগ, ফজলি, চিনি ফজলি, বোম্বাই, গোলাপখাস, কাকাতুয়া, দাদভোগ, চম্পা, সূর্যপুরি, কাঁচামিঠা, কলামোচা, শীতলপাটি, লক্ষ্মণভোগ, গোলাপবাস, আম্রপালি, মল্লিকা, বেগমবাহার, হিমসাগর ইত্যাদি জাতের আম এখনো দেখা যায়।
হিমসাগর (Himsagar):

হিমসাগর আম খুবই জনপ্রিয় | এই জাতের আম পাকলে হলুদ সবুজ রঙের হয়ে যায় | এই আমগুলি সাধারণত মাঝারি আকারের হয়ে থাকে | এগুলি খুব মিষ্টি, খুব সুস্বাদু ও সুঘ্রাণযুক্ত হয়ে থাকে | এই আমের জাত হলো সবচেয়ে সেরা জাত|
গোপালভোগ:

এই জাতের আম মৌসুমে সবার আগে দেখা যায় | গোপালভোগ আম মাঝারি আকারের হয়ে থাকে |এই আম পাকলে হলুদাভ সবুজ রঙের হয়ে থাকে | এই আমে কোনো আঁশ থাকেনা, এটি খেতে খুবই মিষ্টি হয় এবং আঁটি পাতলা হয় |
ল্যাংড়া আম:

এই আম দেখতে অনেকটা আয়তাকার গোল হয়ে থাকে | এই আমের খোসা হালকা সবুজ রঙের হয় | এই আম পাকলে পুরো হলুদ রঙের হয়না | খোসা খুবই পাতলা হয় এবং শাঁস হালকা হলুদ রঙের হয় | এই জাতের আম ঠিক করে না পাকলে খেলে মুখ চুলকায় | এই আম সুঘ্রানের জন্য খুবই বিখ্যাত |

ফজলি আম:

এটি টক গন্ধযুক্ত বড় আকারের মিষ্টি স্বাদের আম | এটি কালচে সবুজ রঙের আম |
আমের মান বৃদ্ধিতে টিপ প্রুনিং (Tip pruning):

আমকে সাধারণত ফলের রাজা বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় উদ্ভাবিত হল আমের ফলন ও গুণগতমান বৃদ্ধির নতুন প্রযুক্তি- আমগাছের টিপ প্রুনিং। বর্তমানে আম চাষাবাদের এলাকা দিন দিন বাড়ছে। বাড়ির ছাদ থেকে শুরু করে বড় বড় বাগান পর্যন্ত গড়ে উঠেছে। বাড়ির আশেপাশে কিংবা ছাদে যে আমের জাতটি সবচেয়ে বেশি চাষ হয় সেটি হল বারি আম-৩ বা আম্রপালি। জাতটি আবার কেউ কেউ চাষ করেছেন টবে এবং ড্রামে। এর কারণ গাছে প্রচুর আম ধরলে আকারে ছোট হয়, গাছকে পর্যাপ্ত খাবার না দিলে আকার ছোট হয় এবং গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথেও আকার ছোট হয়। ফলে জাতটির বাজারমূল্যে দিন দিন কমছে।

আরও পড়ুন - Tuberose Cultivation: রজনীগন্ধা চাষের খরচ কমাতে ও ফলন বৃদ্ধিতে পলিথিন ব্যবহার করুন

আম বিজ্ঞানীরা এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন কয়েক বছর আগে। বর্তমানে সমস্যাটির সমাধান এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, আম সংগ্রহ করার পর অর্থাৎ জুলাই মাসে আমগাছের প্রত্যেকটি ডগার শীর্ষ প্রান্ত হতে ৩০ সে.মি. বা ১ ফুট পর্যন্ত কেটে দিলে পরবর্তী বছরে ওই গাছ থেকে বেশি ফলন ও গুণগতমানসম্পন্ন আম পাওয়া যায়। তবে জুলাই মাসে প্রুনিং করা ভাল। ফলন বাড়ার কারণ হিসেবে দেখা গেছে, ওই অংশ হতে ৩-৪টি নতুন ডগা বের হয় এবং নতুন শাখার বয়স ৫-৬ মাস হওয়ায় প্রায় প্রত্যেকটি শাখায় মুকুল আসে। বর্তমানে এই জাতটির ওজন ৬০-১৮০ গ্রাম থেকে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৫ থেকে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

হাড়িভাঙ্গা আমের ইতিহাস শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বে সমাদৃত রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম।। বাংলাদেশের একমাত্র আশ বিহীন আমের বাম হচ্ছে রংপুরের হারিভাঙ্গা আম। বিখ্যাত, স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হাঁড়িভাঙ্গা আম বদলে দিয়েছে রংপুরের (Rangpur) অর্থনৈতিক ভাগ্য ।

হাঁড়িভাঙ্গা আমের ইতিহাসের গোড়াপওন করেছিলেন নফল উদ্দিন পাইকার নামে এক বৃক্ষবিলাসি মানুষ। ৪৫ বছর আগে মারা যান তিনি। তিনিই প্রথম জনসম্মুখে এনেছিলেন এই আম।শুরুতে এর নাম ছিল মালদিয়া (Maldia)নফল উদ্দিন পাইকারের ইতিহাস সৃষ্টিকারী হাঁড়িভাঙ্গা আমের মাতৃগাছটি আজ ও ইতিহাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রংপুরের মিঠাপুকুরের খোড়াগাছের তেকানী গ্রামে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে গাছটি সংরক্ষণের দাবি তোলা হয়েছে ।একটি মাএ মা – গাছ থেকে হাজার হাজার কলম তৈরি করে হাড়িভাঙ্গার বীজ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে ।

বিশ্বসেরা আম হাড়িভাঙ্গা তার নাম। রংপুরের শতশত মানুষ এই হাড়িভাঙ্গা আম চাষে করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ।হাড়িভাঙ্গা আম দেখতে সাধারণত কিছুটা লম্বাটেসহ গোলাকৃতির এবং কালচে সবুজ রংয়ের ।পাকলে কিছুটা লালচে রং ধারণ করে। হাড়িভাঙ্গা আম এক একটা ২০০-৫০০ গ্রাম হয়ে থাকে ।

হাড়িভাঙ্গা আম ২০ জুনের পর বাজারে পাওয়া যায়। সুগন্ধী, অতি সুমিষ্ট আঁশহীন এই জাতটি মুখে নিলেই মনে হয় অমৃত। পুষ্ট আম বেশি দিন অটুট থাকে। চামড়া কুচকে যায় তবুও পঁচে না। হাড়িভাঙ্গা আমের নামকরণঃতেকানী ও এর আশেপাশের এলাকা খিয়ারী মাটির ।তা ছাড়া বরেন্দ্রপ্রবণ অঞ্চল হওয়ার কারণে লাগানো গাছে পানি দিতে হতো সব সময়।পাইকার নফল উদ্দিন ও সারা দিন বিভিন্ন ভাবে ব্যবসায় বাণিজ্য ও কাজে কামে থাকতেন ।সে কারণে এই আম গাছটির নিচে তিনি মাটির হাঁড়ি দিয়ে ফিল্টার বানিয়ে তাতে সারা দিন পানি দিতেন। এরই মধ্যে একদিন রাতে কে বা কারা এই মাটির হাঁড়িটি ভেঙে ফেলেন ।

এই গাছে বিপুল পরিমাণ আম ধরে ।এগুলো ছিল খুবই সুস্বাদু। সেগুলো বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে গেলে লোকজন এই আম সম্পর্কে জানতে চায়। তখন নফল উদ্দিন মানুষকে বলেন ‘যে গাছের নিচের হাড়িটা মানুষ ভাঙছিল সেই গাছেরই আম এগুলো’তখন থেকেই এই গাছটির আম “হাড়িভাঙ্গা আম” নামে পরিচিত পায়।এটি কাঁচায় ছালসহ খেলে ও মিষ্টি লাগে। এখনো ইতিহাস ও কালের সাক্ষী হয়ে আমগাছটি আছে তেকানী গ্রামে ।দ্রুত গাছটি বেড়ে উঠে এবং বছর তিনেকের মাথায় সেই গাছে আম ধরে ।সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় বিক্রি ও হয় প্রচুর।

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।



রংপুরে ধানসহ অন্যান্য ফসলে ন্যায্যমূল্য না পাওয়া কৃষকদের হতাশার দিন শেষ হতে যাচ্ছে হাঁড়িভাঙ্গা আমে। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় হাঁড়িভাঙ্গা আম বদলে দিয়েছে এখনকার চাষিদের জীবনমান। অনেক ধান চাষি এখন আম চাষ করছেন। প্রতিবছর আম চাষ করে লাখ লাখ টাকার আয়ে শুরু হয়েছে তাদের দিন বদলের গল্প। এখন ভাগ্য বদলে গেছে হাজার হাজার আম চাষি ও কৃষকের। হাঁড়িভাঙ্গা আম যেন রংপুরের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

বিষমুক্ত ও অতি সুমিষ্ট আঁশহীন হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাহিদাও বাড়ছে দিন দিন। কয়েক বছর ধরে ফলন ভালো হওয়ায় বেড়ে চলেছে আম উৎপাদনের পরিমাণও। রংপুর সদর, মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃত এলাকার ফসলি জমি, বাগানসহ উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে চাষ হচ্ছে এই আম।

রংপুর সদর এলাকা ছেড়ে মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জে যেতে দেখা মিলবে সারি সারি গাছ। রাস্তার দুইপাশে যেন হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের সবুজ বিপ্লব। ধানসহ বিভিন্ন ফসলি জমির আইলে আইলে লাগানো হয়েছে আমের গাছ। বাদ পড়েনি বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা, পুকুরপাড়, বাড়ির উঠান। এখন গাছে গাছে দোল খাচ্ছে অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙ্গা। একই চিত্র মিঠাপুকুরের আখিরাহাট, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জের গোপালপুর, নাগেরহাট, সর্দারপাড়া, রংপুর সদরের সদ্যপুষ্করনী ইউনিয়নের কাঁটাবাড়ি, পালিচড়া এলাকাতেও।

গত কয়েক বছরের মতো এবারও হাঁড়িভাঙ্গার বাম্পার ফলন হয়েছে। যদিও হাঁড়িভাঙ্গার দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। প্রতিবছর কম-বেশি শত কোটি টাকার ওপরে বেচা-কেনা হয় হাঁড়িভাঙ্গা আমের। কিন্তু, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। মহামারি করোনার কারণে সঠিক সময়ে আম বাজারজাত ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো না গেলে আছে লোকসানেরও আশঙ্কা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাঁড়িভাঙ্গার রাজধানীখ্যাত পদাগঞ্জের যাতায়াত ব্যবস্থা এখনো নাজুক। আম বিক্রির মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই হাটে-বাজারে কাঁদা মাড়িয়ে যেতে হয়। চাষি, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য পদাগঞ্জ হাটে নেই আম বিক্রির শেড। দীর্ঘদিনেও গড়ে ওঠেনি হাড়িভাঙ্গা আম সংরক্ষণ হিমাগার।

কৃষি বিভাগ ও আম চাষিরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙ্গা আম। হাঁড়িভাঙ্গার প্রকৃত স্বাদ পেতে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে। বর্তমানে বাগানগুলোতে আমের পরিচর্যা চলছে। নির্ধারিত সময়ে আম বাগান মালিক ও চাষিরা গাছ থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আম পাড়তে পারবেন। এরপর থেকে শুরু হবে বাজারজাত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আখিরাহাট, পদগঞ্জ, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুরসহ বেশি কিছু এলাকাতে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সব জাতের আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে রয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৩৫ মেট্রিকটন। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৯২৫ মেট্রিকটন।

হাঁড়িভাঙ্গা আমের গোড়াপত্তন করেছিলেন খোড়াগাছ ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের নফল উদ্দিন পাইকার নামের এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। এখন তার লাগানো হাঁড়িভাঙ্গা গাছটির বয়স ৬৮ বছর। মাতৃগাছটির সংরক্ষণের দাবি জানান নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ হোসেন পাইকার।

একই ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের আমচাষি শাহজাহান মিয়া। বছর দশেক আগেও তিনি শুধু ধান, ভুট্টা আর পাট চাষ করতেন। কিন্তু, গ্রামে হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের বাগানের পর বাগান দেখে তিনিও ৪৮ শতক জমিতে আমের বাগান গড়ে তোলেন।

অর্থনৈতিকভাবে লাভবান এই আমচাষি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আল্লায় দেচে এবার আম ভালো হইচে। গাছোত আম দেকিয়া মন শান্তি। হাঁড়িভাঙ্গা আম খুব সুস্বাদু মিষ্টি। চাহিদাও অনেক বেশি। গত বছর করোনার কারণে খুব বেশি লাভ হয় নাই। এবার আশা করি ভালোয় বেচাবিক্রি হইবে।’

ওই ইউনিয়নের রুপসী আনন্দ বাজার এলাকায় হাসান মিয়া ও সোহাগের মতো আরও অনেকেরই আম বাগান জুড়ে গাছে গাছে দোল খাচ্ছে হাজার হাজার হাঁড়িভাঙ্গা। এই আম যেন তাদের মনে আনন্দ উচ্ছ্বাসের ঢেউ ছড়াচ্ছে। তারা স্বপ্ন দেখছেন হাঁড়িভাঙ্গাকে ঘিরে এবার রংপুর অঞ্চলে দেড়শ কোটি টাকার বেশি বিকিকিনি হবে।

আখিরাহাট এলাকার আমচাষি নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কতাত কয় না অভাবোত স্বভাব নষ্ট। আগোত উপায় না থাকাতে মাইনসে খালি ধান আবাদ করছে। এ্যলা হামরা ধান আবাদ করি খাওয়ার জনতে, আর আম করছি লাভের জনতে। গ্রামোত একটা বাড়িও খুঁজি পাওয়া যাবার নায় যে বাড়ির খুলিত হাঁড়িভাঙ্গার গাছ নাই।’

হাঁড়িভাঙ্গা আমকে ঘিরে বেকারের সংখ্যাও কমেছে রংপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়। বেকার যুবকরা এখন আম ব্যবসায় জড়িয়ে বেকারত্ব দূর করেছেন। অনেকে আবার উদ্যোক্তা হিসেবে হাড়িভাঙ্গার বাজার সম্প্রসারণ ও চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।

তরুণ উদ্যোক্তা ও আমচাষি মেহেদী হাসান পলাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পড়ালেখা করে অনেক দিন ভাবছি কী করব। এখন আমি আমকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছি। প্রথমে পরীক্ষণমূলক ভাবে আম চাষ শুরু করেছিলাম। লাভবান হবার পর থেকে এখন বাণিজ্যিক ভাবে হাঁড়িভাঙা আমের চাষাবাদ ও ব্যবসা করছি। নিজের পাশাপাশি এলাকার অন্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে চেষ্টাও করছি।

আখিরাহাটের বাসিন্দা আব্দুস সালাম ১৯৯২ সাল থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ করে আসছেন। শুধু চাষাবাদ নয়, এই অঞ্চলের হাঁড়িভাঙ্গার বিস্তৃত সম্প্রসারণে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার হাত ধরেই এ অঞ্চলের মানুষ এখন অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভের আশায় জেলার উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে প্রতিবছরে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

আব্দুস সালাম সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ করছি। আমার ২৫টির বেশি বাগান রয়েছে। এরকম অনেকের আম বাগান রয়েছে। পুরো জেলায় এখান প্রতি বছর প্রচুর আম উৎপাদন হয়। টেকসই অর্থনীতির জন্য আমি শুরু থেকেই হাড়িভাঙ্গা আমের সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপন, আধুনিক আম চাষ পদ্ধতি বাস্তবায়ন, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ হাড়িভাঙ্গাকে জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি করে আসছিলাম। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে এই দাবি উপেক্ষিত হলেও আমের উৎপাদন ও বাগান সম্প্রসারণ থেমে নেই। সরকার একটু দৃষ্টি দিলেই হাড়িভাঙ্গাকে ঘিরেই এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও সচল হবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জেলায় এখন ব্যাপকভাবে হাঁড়িভাঙ্গা আম চাষ হচ্ছে। খুব বেশি পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করতে না হওয়ায় মানুষ আম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’

দেশের অন্যান্য স্থানের আম শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাঁড়িভাঙ্গা আম বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসে। জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে এই আম বাজরে আসবে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাজারজাত করতে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, সেটি মনিটরিং করা হবে। বিশেষ করে পরিবহনে ব্যবসায়ীদের কোনো হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি সরকারি পরিবহন সুবিধার বিষয়টিও দেখা হবে।’

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

বছরের পর বছর ধরে রংপুরে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন হয়ে আসছে। তবে ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় দিন দিন বেড়েছে হতাশা। এখন সেই হতাশার ছাপ কেটে গেছে। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হাঁড়িভাঙ্গা আম বদলে দিয়েছে এখনকার চাষিদের পরিচয়। ধানচাষিরা এখন আমচাষি। প্রতি বছর আম চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করে শুরু হয়েছে তাদের দিন বদলের গল্প। ভাগ্য বদলে গেছে হাজার হাজার আমচাষি ও কৃষকের। হাঁড়িভাঙ্গা আম যেন রংপুরের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

বিষমুক্ত ও অতি সুমিষ্ট আশঁহীন হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। কয়েক বছর ধরে ফলন ভালো হওয়ায় বেড়ে চলেছে আম উৎপাদনের পরিধিও। রংপুর সদর, মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃত এলাকার ফসলি জমি, বাগানসহ উঁচু-নিচু ‍ও পরিত্যক্ত জমিতে চাষ হচ্ছে এই আম।

রংপুর সদর এলাকা ছেড়ে মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জে যেতে দেখা মিলবে সারি সারি গাছ। রাস্তার দুপাশে যেন হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের সবুজ বিপ্লব। ধানসহ বিভিন্ন ফসলি জমির আইলে আইলে লাগানো হয়েছে আমের গাছ। বাদ পড়েনি বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা, পুকুরপাড়, বাড়ির উঠান। এখন গাছে গাছে দোল খাচ্ছে অপরিপক্ক হাঁড়িভাঙ্গা। একই চিত্র মিঠাপুকুরের আখিরাহাট, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জের গোপালপুর, নাগেরহাট, সর্দারপাড়া, রংপুর সদরের সদ্যপুষ্করনী ইউনিয়নের কাঁটাবাড়ি, পালিচড়া এলাকাতেও।

গত কয়েক বছরের মতো এবারও হাঁড়িভাঙ্গার বাম্পার ফলন হয়েছে। যদিও হাঁড়িভাঙ্গার দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর কম বেশি শত কোটি টাকার ওপরে বিক্রি হয় হাঁড়িভাঙ্গা আম। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। মহামারি করোনার কারণে সঠিক সময়ে আম বাজারজাত ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো না গেলে রয়েছে লোকসানেরও আশঙ্কা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাঁড়িভাঙ্গার রাজধানীখ্যাত পদাগঞ্জের যাতায়াত ব্যবস্থা এখনো নাজুক। আম বিক্রির মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই হাট-বাজারে কাঁদা মাড়িয়ে যেতে হয়। চাষি, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য পদাগঞ্জ হাটে নেই আম বিক্রির শেড। মোটা অংকের লেনদেনে নেই ব্যাংক ও বুথ। জেলার বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীদের থাকার জন্য আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাও নেই। দীর্ঘদিনেও গড়ে উঠেনি হাড়িভাঙ্গা আম সংরক্ষণ হিমাগার।

কৃষি বিভাগ ও আমচাষিরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ক হাঁড়িভাঙ্গা আম। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙ্গা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ক হবে। হাঁড়িভাঙ্গার প্রকৃত স্বাদ পেতে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে। বর্তমানে বাগানগুলোতে আমের পরিচর্যা চলছে। নির্ধারিত সময়ে আম বাগান মালিক ও চাষিরা গাছ থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আম পাড়তে পারবেন। এরপর থেকে শুরু হবে বাজারজাত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, এবার রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আখিরাহাট, পদগঞ্জ, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুরসহ বেশি কিছু এলাকায় প্রায় ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে সব জাতের আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে রয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৯২৫ মেট্রিক টন আম।

জেলার মধ্যে বদরগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ৪০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এ ছাড়াও রংপুর মহানগর এলাকায় ২৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৬০ হেক্টর, কাউনিয়ায় ১০ হেক্টর, গঙ্গাচড়ায় ৩৫ হেক্টর, মিঠাপুকুরে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর, পীরগঞ্জে ৫০ হেক্টর, পীরগাছায় ৫ হেক্টর ও তারাগঞ্জ উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে।

হাঁড়িভাঙা আমের গোড়াপত্তন করেছিলেন খোড়াগাছ ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের নফল উদ্দিন পাইকার নামে এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগের বছর ১৯৭০ সালে নফল উদ্দিন ১২০ বছর বয়সে মারা যান। এখন তার লাগানো হাঁড়িভাঙ্গা গাছটির বয়স ৬৮ বছর। মাতৃগাছটির সংরক্ষণের দাবি জানান নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ হোসেন পাইকার।

একই ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের আমচাষি শাহ্জাহান মিয়া। বছর দশেক আগেও তিনি শুধু ধান, ভুট্টা আর পাটচাষ করতেন। কিন্তু গ্রামে হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের বাগানের পর বাগান দেখে তিনিও ৪৮ শতক জমিতে আমের বাগান গড়ে তোলেন।

অর্থনৈতিকভাবে লাভবান এই আমচাষি ঢাকা পোস্টকে বলেন,‘আল্লায় দেচে এবার আম ভালো হইচে। গাছোত আম দেকে মনে শান্তি পাই। আল্লাহ রহম করলে আম ব্যাচে মাইনসের ঋণ পরিশোধ করিম। হাঁড়িভাঙ্গা আম খুব সুস্বাদু মিষ্টি। চাহিদাও অনেক বেশি। গত বছর করোনার কারণে খুব বেশি লাভ হয় নাই। এবার আশা করি ভালোয় বেচাবিক্রি হইবে।’

ওই ইউনিয়নের রুপসী আনন্দ বাজার এলাকায় হাসান মিয়া ও সোহাগের মতো আরও অনেকেরই আম বাগান জুড়ে গাছে গাছে দোল খাচ্ছে হাজার হাজার হাঁড়িভাঙ্গা। এই আম যেন তাদের মনে আনন্দ উচ্ছ্বাসের ঢেউ ছড়াচ্ছে। তারা স্বপ্ন দেখছেন হাঁড়িভাঙ্গাকে ঘিরে এবার রংপুর অঞ্চলে দেড়শ কোটি টাকার বেশি বিকিকিনি হবে।

আখিরাহাট এলাকার আমচাষি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কতাত কয় না অভাবোত স্বভাব নষ্ট। আগোত উপায় না থাকাতে মাইনসে খালি ধান আবাদ করছে। এ্যলা হামরা ধান আবাদ করি খাওয়ার জনতে, আর আম করছি লাভের জনতে। খালি হামার গ্রামোতে নোয়ায় এ্যলা হাঁড়িভাঙ্গা আম চাবালুয়া, শ্যামপুর, হেলেঞ্চ, পাইকারেরহাট, জারুল্লাপুর, খোঁড়াগাছ, গোপালপুর, সরদারপাড়া, লালপুর, পদাগঞ্জ, তেকানি, দুর্গাপুরসহ মেলা কয়টা গ্রামোত চাষ হওচে। গ্রামোত একটা বাড়িও খুঁজি পাওয়া যাবার নায় যে বাড়ির খুলিত হাঁড়িভাঙ্গার গাছ নাই।’

হাঁড়িভাঙা আমকে ঘিরে বেকারের সংখ্যাও কমেছে রংপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়। বিশেষত মিঠাপুকুরের লালপুর, পদাগঞ্জ, তেকানিসহ আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকরা এখন আম ব্যবসায় জড়িয়ে বেকারত্ব দূর করেছেন। অনেকে আবার উদ্যোক্তা হিসেবে হাড়িভাঙ্গার বাজার সম্প্রসারণ ও চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।
পড়ালেখা করে অনেক দিন ভাবছি কি করব। এখন আমি আমকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছি। প্রথমে পরীক্ষণমূলকভাবে আম চাষ শুরু করেছিলাম। লাভবান হওয়ার পর থেকে এখন বাণিজ্যিকভাবে হাঁড়িভাঙা আমের চাষাবাদ ও ব্যবসা করছি। নিজের পাশাপাশি এলাকার অন্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে চেষ্টাও করছি।
মেহেদী হাসান পলাশ, তরুণ উদ্যোক্তা ও আমচাষি

নির্বিঘ্নে আম বাজারজাত করতে দুর্যোগকালীন দুশ্চিন্তা তাড়াতে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষি বিপণন ও পরিবহন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার দাবি জানান হাঁড়িভাঙ্গা আমের সম্প্রসারক আব্দুস সালাম সরকার।

আখিরাহাটের বাসিন্দা আব্দুস সালাম ১৯৯২ সাল থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ করে আসছেন। শুধু চাষবাদ নয়, এই অঞ্চলের হাঁড়িভাঙ্গা সম্প্রসারণে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার হাত ধরেই এ অঞ্চলের মানুষ এখন অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভের আশায় জেলার উঁচু-নিচু ‍ও পরিত্যক্ত জমিতে প্রতি বছর হাড়িভাঙ্গা আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

আব্দুস সালাম সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ করছি। আমার দেখাদেখি এখন রংপুরে কয়েক লাখ হাঁড়িভাঙ্গা আমের গাছ রোপণ করেছে আমচাষিরা। আমার ২৫টির বেশি বাগান রয়েছে। এ রকম অনেকের আম বাগান রয়েছে। পুরো জেলায় এখান প্রতি বছর প্রচুর আম উৎপাদন হয়।

টেকসই অর্থনীতির জন্য আমি শুরু থেকেই হাড়িভাঙ্গা আমের সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপন, আধুনিক আমচাষ পদ্ধতি বাস্তবায়ন, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ হাড়িভাঙ্গাকে জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি করে আসছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই দাবি উপেক্ষিত হলেও আমের উৎপাদন ও বাগান সম্প্রসারণ থেমে নেই। সরকার একটু দৃষ্টি দিলেই হাড়িভাঙ্গাকে ঘিরেই এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও সচল হবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘জেলায় এখন ব্যাপকভাবে হাঁড়িভাঙা আম চাষ হচ্ছে। খুব বেশি পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করতে না হওয়ায় মানুষ আমচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চাষি, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকদের কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রংপুরে এ বছর হাঁড়িভাঙা আম চাষ হয়েছে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে। দেশের অন্যান্য স্থানের আম শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাঁড়িভাঙ্গা আম বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসে। জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে এই আম বাজারে আসবে। শুধু হাঁড়িভাঙ্গা আমই দেরি করে বাজারে আসে না, গৌরমুখি ও বারি-৪ জাতের আম আরও পরে পেকে থাকে। তবে হাড়িভাঙ্গা আমের মতো সেগুলোর বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি নেই।’

রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ‘হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাজারজাত করতে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, সেটি মনিটরিং করা হবে। বিশেষ করে পরিবহনে ব্যবসায়ীদের কোনো হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি সরকারি পরিবহন সুবিধার বিষয়টিও দেখা হবে।’

এদিকে রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, এছাহাক, ছাইবুদ্দিন, সাদা ল্যাংড়া, কালা ল্যাংড়া, কলিকাতা ল্যাংড়া, মিশ্রিভোগ, গোপালভোগ, আম্রপালি, সাদারুচিসহ আরও নানা প্রজাতির আম উৎপাদন হয়ে আসছে। এসব আমের ভিড়ে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা হাড়িভাঙ্গার। একটি হাঁড়িভাঙ্গা আমের ওজন ২শ থেকে সাড়ে ৪শ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

আমের নাম ‘মিয়াজাকি’। যাকে বলা হয় ‘রেড ম্যাঙ্গো’। কেউ কেউ একে ‘এগ অব দ্য সান’ হিসেবে চেনেন। বাংলাদেশে পরিচিত ‘সূর্যডিম আম’ নামে। এটি জাপানিজ আমের একটি প্রজাতি। পৃথিবীর সব চেয়ে দামি আম এটি। অন্য সব আমের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি সুস্বাদু ও মিষ্টি এই আম। বিশ্ববাজারে একটি মিয়াজাকির দাম প্রায় ৭০ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ছয় হাজার। প্রতিটি আমের গড় ওজন প্রায় ৪০০-৫০০ গ্রাম। অর্থাৎ প্রতি ১০ গ্রাম আমের দাম এক ডলারের মতো।

বিশ্বের এই সেরা ও দামি আমের উৎপাদন এবার শুরু হতে চলেছে বাংলাদেশে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ আমের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এটি চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় পাকতে শুরু করেছে এ আম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, জাপানিজ এই আম বা রেড ম্যাঙ্গো উৎপাদনে দেশ অচিরেই সফলতার মুখ দেখবে।

অধিদপ্তরের পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. মেহেদী মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সূর্যডিম আম চাষে কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো- ফলের নতুন নতুন জাত দেশে সম্প্রসারণ করা। থাইল্যান্ড থেকে আমরা আমের ১৪টি ভ্যারাইটি নিয়ে এসেছি। এরমধ্যে ২০১৬ সালে ১৫শ’ সূর্যডিম জাতের আম দেশের ৭৫টি হর্টিকালচার সেন্টারে মাতৃবাগান হিসেবে রোপণ করা হয়। প্রায় চার বছর পর রাজধানীর আসাদগেট, মাদারীপুরের মোস্তফাপুর, দিনাজপুর, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও গাজীপুরের নুরবাগের হর্টিকালচার সেন্টারে ফল এসেছে এবং পেকেছে।’

৫০ শতাংশ গাছে ফল ধরেছে জানিয়ে ড. মো. মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘পাকলে এই আমের রং হয় লাল, পাকার আগে রং থাকে গোলাপি। দামি এই আমের চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চায় সরকার। সেই লক্ষ্যে এক হাজার গাছের কলম করা হচ্ছে। এসব কলম চাষিদের কাছে বিতরণের পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ফল পাওয়া গেছে। প্রতিটি সেন্টারে আরও বেশি গাছ লাগানো হবে। বিশেষ করে বাসা-বাড়ির ছাদে এই আমের গাছ লাগানোর ব্যাপারে আমরা উৎসাহী করছি। এখনও কলম বিক্রির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সূর্যডিম আমের চারা একশ টাকার বেশি হবে না।’

হর্টিকালচার সেন্টারের মাধ্যমে সূর্যডিম আম সারাদেশে কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে উৎপাদিত এ আম খেয়ে প্রশংসা করেছেন। জাপান সরকার ব্রিটিশ রানী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের এই আম উপহার দেয়। বাংলাদেশে অনেক সেন্টারে সূর্যডিম গাছ লাগানো হয়েছে, উৎপাদনও হয়েছে।’

তিনি বলেন, সম্প্রতি চারটি আম আসাদ গেট থেকে সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুধু আম উৎপাদন নয়, দিনে দিনে আরও অনেক ফল উৎপাদনে সফলতার উদাহরণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। মৌসুমি ফল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ।

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

 

ফারিয়া শারমিন অনন্যা

সবার অতি পছন্দের গ্রীস্মকালীন ফল আম। মিষ্টি, সুঘ্রানযুক্ত, রসালো এই ফলের উৎপাদন, চাহিদা ও জনপ্রিয়তার বিচারে অনায়াসে একে ফলের রাজা বলাই যায়। শুধু তাই নয় পুষ্টিগুণ বিচারেও এই আমের কদর কিন্তু কম নয়। এর নানা গুণাগুণের জন্য জন্য যেমন আম খাবেন তেমনি অতিরিক্ত আম খাওয়াও কিন্তু অনেকের জন্য স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। তাই চলুন দেখে নেই আমের নানা উপকারীতা ও সেইসঙ্গে কে কতটুকু খাবেন সেই বিষয়ক কিছু আলোচনা।
বিজ্ঞাপন

আম কেন খাবেন
আমে রয়েছে হাজারো উপকারিতা। এত পুষ্টি উপকার যে বলে শেষ করা যাবে না। আসুন তবে জেনে নেয়া যাক আমের খুব সাধারণ কিছু পুষ্টি উপকারিতা সম্পর্কে-

১. ত্বক উজ্জ্বল, মসৃন ও সুন্দর রাখে
২. আমের ভিটামিন-সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে
৩. চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে
৪.পরিপাক ও হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
৫. স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতায় ভূমিকা রাখে
৬. ভালো ঘুম হয়
৭. দাঁত, চুল ও নখের জন্য বিশেষ উপকারী
৮. রোদে ত্বক নষ্ট হওয়া প্রতিরোধ করে ও রোদে পোড়া ভাব কমায়
৯. গরমের দিনে হিট স্ট্রোক হওয়া প্রতিরোধ করে
১০. আম দেহে ক্যালোরি প্রদানের মাধ্যমে দেহকে কর্মক্ষম ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে
বিজ্ঞাপন

জেনে নিন আমের জাদুকরী কিছু গুণাগুণ
উপরে তো গেল আমের সাধারণ কিছু উপকারিতার কথা যা কমবেশ অনেকেরই জানা তবে এ ছাড়াও আমের এমন এমন কিছু আশ্চর্যজনক গুনাগুনও রয়েছে যা অনেকেরই অজানা। আসুন তবে জেনে নেয়া যাক আমের সেসব উপকারীতার কথা—

১. আমের হাই ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উভয়ে রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে চমৎকার ভূমিকা পালন করে
২. আমে বিদ্যমান বায়োঅ্যাক্টিভ ও ফাইটোক্যামিকেল উপাদান দেহের ফ্যাট সেল ও ফ্যাট রিলেটেড জিন-এর বিকাশ ও বৃদ্ধিকে দমন করে। দেহের ফ্যাট বা মেদ কমাতে সাহায্য করে
৩. আমে উপস্থিত ফাইবার ও কোলেস্টেরল লোয়ারিং প্রোপার্টি রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে
৪. আম হল হাই ফাইবার ও হাই পটাশিয়ামযুক্ত একটি ফল যা দেহের গ্লুকোজ, কোলেস্টেরল, ফ্যাট নিয়ন্ত্রণসহ আদর্শ ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। রক্তনালীর সুস্থতায় ভূমিকা রাখে, ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। মোটের উপর হৃৎপিন্ডের সার্বিক সুস্থতায় চমৎকার একটি ভূমিকা পালন করে থাকে
৫. আম লো গ্লাইসেমিক বিশিষ্ট ফল হওয়ায় এবং এতে হাই ফাইবার, হাই ওয়াটার ও ফ্যাট রিডিওসিং উপাদান বিদ্যমান থাকায় ওজন কমাতে এবং সুন্দর একটি ওজন বজায় রাখতে আমের ভূমিকা রয়েছে
৬. আমে উপস্তিত ২০ রকমের বেশি ভিটামিনস ও মিনারেলস দেহের হাড়ের সার্বিক সুস্থতায় এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে
৭. আমে বিদ্যমান ফেনলিক উপাদানসমূহ বিশেষ করে পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ সম্মিলিতভাবে বয়স কিংবা বার্ধক্যজনিত ছাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে
৮. আমের গ্লুটামিক এসিড নামক কতিপয় উপাদান স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে ও কোনো কাজে ভালোভাবে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে
৯. আমের উচ্চমানের পলিফেনলের মধ্যে অ্যান্টিক্যানসার জাতীয় উপাদান বিদ্যমান। এর মধ্যে ম্যাঙ্গিফেরিন নামক অ্যান্টিক্যানসার উপাদানটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আমের এসব উপাদান লিউকেমিয়াসহ কোলন, লাংস, প্রোস্টেট ও ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করে বলে গবেষণায় দেখা গিয়েছে
১০. আমে উপস্তিত প্রচুর পরিমাণ ফোলেট ও আয়রন দেহে রক্তকনিকা গঠনে সাহায্য করে। অর্থাৎ আম দেহের রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে
বিজ্ঞাপন

আম কতটুকু খাবেন
আম-কাঁঠালের এই মধুমাসে ছোট বড় সবাই আমরা প্রায় প্রতিদিনই আম খেয়ে থাকি। তবে আম বলে কথা নয় প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই যেকোনো খাবারই একটি নির্দিষ্ট বা পরিমিত পরিমাণেই খাওয়া উচিৎ। বিশেষ করে ডায়বেটিস রোগীদেরকে আম খাওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। যদিও আম হল লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ফুড তবুও আমে প্রচুর শর্করা ও চিনি রয়েছে। এছাড়াও আমের প্রায় ৮০-৯০ শতাংশই হল ক্যালরি। এসমস্ত কারণে ডায়বেটিস রোগীর ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণে আম খেতে হবে। প্রতিদিন ১ টি ছোট বা মাঝারি আমের (৩০-৪০গ্রাম) অর্ধেকটা (১/২ কাপ অথবা ২-৩ স্লাইস) খাওয়া যেতে পারে, এর বেশি নয়।

আবার ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সময় মেনে খাবার খাওয়াটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দিনের শুরুর দিকে অর্থাৎ দিনের বেলা আম খেলে, আমের ক্যালরিটুকু সারাদিনের কাজকর্মের মাধ্যমে নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই সন্ধ্যার পর বা রাতে না খেয়ে আম দিনের বেলাতে খাওয়াটাই নিরাপদ।
বিজ্ঞাপন

আর খাবারের ধরণ কিংবা কি পদ্ধতিতে খাবার খাওয়া হচ্ছে সেটিও কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমের জুস বা শেক না খেয়ে আঁশ সমেত গোটা আম খাওয়াটাই ভালো। আবার একেবারে মিষ্টি আমের চেয়ে একটু টকমিষ্টি জাতীয় আম খাওয়াটা বেশি শ্রেয়।

তবে মোটের ওপর একজন ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে, ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী যেকোনো খাবার গ্রহণ করা উচিৎ। এক্ষেত্রে আম খাওয়ার ব্যাপারেও ব্যক্তিভেদে পুষ্টিবিদের দেওয়া চার্ট অথবা পরামর্শ অনুসরণ করাই উত্তম।
বিজ্ঞাপন

সবার শেষে আসুন দেখে নেই প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমের পুষ্টির পরিমাণ—

ক্যালরি (শক্তি)- ৮২ cal
পানি- ৭৮.৪ g
প্রোটিন- ০.৮ g
ফ্যাট- ০.৪ g
কার্বোহাইড্রেট- ১৮ g
ফাইবার- ১.৬ g
ক্যালসিয়াম- ১৩ mg
ম্যাগনেশিয়াম- ১৫ mg
ফসফরাস- ১৬ mg
পটাশিয়াম- ১৮১ mg
ভিটামিন এ- ২৫ mcg
বিটা ক্যারোটিনয়েডস- ৩০০ mcg
ফলেট- ৭১ mcg
ভিটামিন সি- ১০৩ mg

সারাবাংলা/আরএফ

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

আম খেতে ভালবাসেন না! এমন মানুষ হয়ত টেলিক্সোপ দিয়ে খুঁজতে হবে। গরমকালে আমের মিষ্টি স্বাদ ও গন্ধে, কার না মন মজে? তবে জানেন কি, ফলের রাজাকে চিনে নেওয়া অতটা সহজ নয়। রয়েছে বেশকিছু পদ্ধতি।
2/7
মল্লিকা
সারা বছর পাওয়া গেলেও, মোটামুটি মার্চের শেষের দিক থেকে জুলাই মাস হল আমের সিজন। এই সময়ই বাজারে বেশি করে ফলের রাজার সাক্ষাৎ মেলে। জানেন কি বাজারে কত ধরনের আম পাওয়া যায়?
3/7
তোতাপুরী
আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখি শুধুমাত্র বাংলাতেই তোতাপুরী, মধু কুলকুলি, ফলজি, গোলাপভোগ, অরুণা, আম্রপালি, সুবর্ণরেখা, নীলাম্বরী, কাঁচামিঠে, কালাভোগ, বারোমাসি, গোলাপখাস, ত্রিফলা, হিমসাগর, ল্যাংরা, লতানে বোম্বাই, চৌষা, মোমফলি ইত্যাদি নানা ধরনের আম পাওয়া যায়। এবার বলা যাক এদের চিনবেন কীভাবে?
4/7
আলফোনসো
আমের জাত চেনায় তার গন্ধ। ভাল আম চিনতে নিজের ঘ্রাণশক্তির উপর ভরসা রাখুন। তবে আমের প্রকারভেদে বদলে যায় গন্ধ। কথায় বলে আমের বোঁটার কাছের অংশ থেকে যদি মিষ্টি সুগন্ধ বেরোয়, তবে সেই আম নাকি সুস্বাদু।
5/7
ফজলি
আম কেনার আগে তা একবার আঙুল দিয়ে টিপে দেখতে হবে। যদি তা আঙুলের চাপে গর্ত হয়ে যায়, তবে সেই আম একদম কিনবেন না।
6/7
হিমসাগর
অনেকেই বাজারে গিয়ে একটু কম দামে দাগযুক্ত আম কেনেন। তবে সেটা একদম করবেন না। পুরুষ্ট, দাগহীন আম কেনাই শ্রেয়।

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

 

ফলের রাজা আম মধু মাসের সময়টাতে আম খেতে পছন্দ করেন না এমন বাঙালি পাওয়া দুস্কর বাজারে বিভিন্ন ধরনের আম রয়েছে কিন্তু কোনটা যে কি আম, তা চিনতে-কিনতে বিড়ম্বনার শেষ নেই অধিকাংশ ক্রেতাই আম চিনতে ভুল করেন আম কেনার পর অনেকেই বুঝতে পারেন না তিনি কোন আমটি কিনছেন সেরা ১০ জাতের আম সহজেই কিভাবে চিনতে পারবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক-

 

. গোপালভোগ: গোপালভোগের গায়ে সাধারণত হলুদ ছোপ ছোপ দাগ থাকে এটির নিচের দিকে একটু সরু এবং পাকার পর হলুদ হয়ে যায় মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাজারে পাওয়া যায় পাওয়া যায় গোপালভোগ 

 

. রূপালী আম বা আম্রপালি: রূপালী আম বা আম্রপালি নিচের দিকে খানিকটা সুঁচালো এবং উপরে একটু গোলাকৃতির হয় এই আম মিষ্টি বেশি স্বাদে অতুলনীয়

 

 

. ল্যাংড়া: ল্যাংড়া আম দেখতে কিছুটা গোলাকার মসৃণ এর নাকটি দেখা যায় নিচের দিকে এর চামড়া খুবই পাতলা

 

. রাণী পছন্দ: রাণী পছন্দ দেখতে অনেকটা গোপালভোগের মতোই এর গায়েও হলুদ দাগ আছে কিন্তু আকারে ছোট ফলে গোপালভোগের সঙ্গে রাণী পছন্দ মেশালে আলাদা করা কষ্টকর

 

 

. বারি আম- বা লক্ষণভোগ: বারি আম- বা লক্ষণভোগ চেনার সহজ উপায় হলো নাক আছে মাঝামাঝি স্থানে মিষ্টি কম পাকলে হলুদ রং হয় সাধারণত জুন মাসের শুরুর দিকে এই আম পাওয়া যায়

 

. ক্ষীরসাপাতি আম: খুবই মিষ্টি ক্ষীরসাপাতি আম অনেকে হিমসাগর বলে বিক্রি করেন এই আম আকারে একটু বড় হয় আমে হালকা দাগ থাকে ক্ষীরসাপাতি আম বাজারে পাওয়া যায় মে মাসের শেষে অথবা জুনের প্রথম দিকে

 

. আশ্বিনা ফজলী: আশ্বিনা আর ফজলী আম দেখতে একই রকম তবে আশ্বিনা আম একটু বেশি সবুজ ফজলী আম খানিকটা হলুদ হয় আশ্বিনার পেট মোটা হয় ফজলী দেখতে লম্বা ধরনের হয়

 

. হিমসাগর: উৎকৃষ্ট স্বাদের সুগন্ধযুক্ত জাতের আমের মধ্যে হিমসাগরের অবস্থান প্রায় শীর্ষে হিমসাগর আম জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকতে শুরু করে এবং পুরো জুন মাস বাজারে পাওয়া যায় আমের ঠোঁট নেই, গড়ন বুকের দিকটা গোলাকার এবং অবতল থেকে সামান্য লম্বাটে আকার নিয়ে শীর্ষদেশ গোলাকৃতির হয়ে থাকে পরিপক্ক হিমসাগর আমের রং হালকা সবুজ পাকার পরেও সবুজ থেকে যায় ত্বক মসৃণ, খোসা পাতলা

 

 

. হাড়িভাঙ্গা: রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার বিখ্যাত সুস্বাদু আম হাড়িভাঙ্গা আমের উপরিভাগ তুলনামূলক বেশি মোটা চওড়া এবং নিচের অংশ অপেক্ষকৃত চিকন আকারে বড় হওয়ার কারেণ ৩টি আমে ১কেজি হয়ে যায় আম মাংসালো, শ্বাস গোলাকার একটু লম্বা চামড়া কুঁচকে যায় কিন্তু পঁচে না

 

 

১০. সুবর্ণরেখা: আমটির আকার মাঝারি ডিম্বাকৃতির সাধারণত আগাম জাতের আম এটি সুবর্ণরেখা আমের বোটার পাশে লাল রং থাকে সুস্বাদু রসালো আমটির নাম এদেশে সুবর্ণরেখা বা সুন্দরী হলেও দক্ষিণ ভারতে একে চিন্না আম বলে

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

ড. মো. শরফ উদ্দিন

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। নদী মাতৃক এই দেশ আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও জনসংখ্যায় ভরপুর। এ ছাড়াও প্রতিদিন যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। বাড়তি জনসংখ্যার এই দেশে মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার পূরণে হিমশিম খাচ্ছেন দেশের নীতিনির্ধারকরা। এর সাথে যোগ হয়েছে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ১০-১২ লাখ কর্মহীন রোহিঙ্গা। ফলে এসব জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে, বাড়তি খাদ্যশস্য ও ফলমূল। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, কলকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত নির্মাণে প্রতি বছর চাষাবাদযোগ্য জমি ১% হারে কমছে এমনটিই শোনা যায়। আম্পান, আইলারমতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ পিছু ছাড়েনি এ দেশের। তারপরও কৃষিবান্ধব সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ, দিকনির্দেশনা, কৃষি ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার এবং কৃষি বিজ্ঞানীদের লাগসই উদ্ভাবন কৃষি উৎপাদনকে সুসংহত করেছে। আজ আমরা দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পর্ণ। তবে ফল ও সবজি উৎপাদনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সবাই ব্যস্ত। ফলের বাণিজ্যিক উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক গুণ বেড়েছে। দেশীয় ফলের সাথে সাথে বিদেশী ফলসমূহ দেশের চাহিদা পূরণে ভ‚মিকা রাখছে। এদেশের মানুষের সবচেয়ে পছন্দনীয় ফল হলো আম। সারা বছর চাহিদানুযায়ী ফল খেতে না পেলেও আমের মৌসুমে সাধ্যমতো পুষিয়ে নেন ভোক্তারা। ফলে বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে আমের উৎপাদন বাড়ছে। এই চাহিদা পূরণে ২৩টি জেলায় আমের বাণিজ্যিক চাষাবাদ সম্প্রসারণ হয়েছে। তবে অন্য জেলাগুলোতেও আমের উৎপাদন বাড়ছে। তারপরও নতুন বাগান স্থাপনে থেমে নেই জমির মালিক ও আম চাষিরা। বিগত কয়েক বছরে সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় আম চাষ সম্প্রসারিত হলেও নওগাঁ জেলায় সবচেয়ে বেশি আম বাগানের সম্প্রসারণ হয়েছে। ধানের চেয়ে তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় প্রথমে ধানের জমিতে আমগাছ লাগানো শুরু করেছেন। এরপর তা শুধু আম বাগানে রূপান্তরিত হচ্ছে। ছবিতে ধানের জমিতে আমগাছ লাগানো হয়েছে। এই জেলার সবচেয়ে বেশি আম বাগান সম্প্রসারিত হয়েছে পোরশা ও সাপাহার উপজেলায়। এই জেলায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয় বারি আম-৩ তথা আ¤্রপালি জাতের এবং এর পরের স্থান বারি আম-৪। অন্য জাতগুলোও কম পরিমাণে চাষ করতে দেখা যায়। সকল মানুষের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে, বারি আম-৩ জাত বা আ¤্রপালি সম্পর্কে। অনেকের ধারণা গাছটি আকারে বড় হয় না এবং বেশি বছর বাঁচে না। এই ধারণাটি পুরোপুরি ঠিক নয়। আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত¡ গবেষণা কেন্দ্র, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ বছর বয়সের গাছ রয়েছে এবং এই গাছগুলোর বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ফলধারণক্ষমতায় বাড়ছে। এই জাতের গাছ বেশি বড় হয় না বিধায় চাষিরা অতি ঘন পদ্ধতিতে আম বাগান স্থাপন শুরু করেছেন।


অতি ঘন পদ্ধতি
সকলের জানার সুবিধার জন্য আম বাগান স্থাপনের অতি ঘন পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারণা দেয়া হলো। এদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে যে আম বাগানগুলো দেখা যায়, সেগুলো কমপক্ষে ৩০ দ্ধ ৩০ ফুট দূরত্বে অর্থাৎ প্রতি হেক্টরে ১০০টি কলম লাগানো হতো তবে কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০ দ্ধ ৪০ ফুট  দূরত্বের বাগানও দেখতে পাওয়া যায়। অনেক বড় আম বাগানে এক বিঘা জমিতে  একটি বা দুইটি আমগাছ দেখা যায়। ১৯৮৫ সালে আম গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর বড় জাতগুলোর জন্য ৩০ দ্ধ ৩০ ফুট (প্রতি হেক্টরে ১০০টি গাছ) এবং ছোটজাতগুলোর জন্য ১২ থেকে ১৮ ফুট (৬২৫টি হতে ৫৫৫টি গাছ প্রতি হেক্টরে) দূরত্বে রোপণের জন্য পরামর্শ দেয়া হতো। ফলে ১০-১২ বছর অনায়াসে আম বাগানে অন্য ফসল চাষ ও আমের ফলন পেতে তেমনটি অসুবিধা হতো না। এরপর চালু হলো দুইটি বড় জাতের গাছের মধ্যে একটি ছোট জাতের গাছ লাগানো এবং ১০-১২ বছর পরে বড় গাছের সাথে প্রতিযোগিতা শুরু হলে মাঝের গাছটি কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হতো। তবে অনেকে মাঝের ছোট গাছটি কাটতে চাইতেন না। ফলে উভয় গাছের ফলন বাধাগ্রস্ত হতো এবং রোগ ও পোকার আক্রমণের কারণে ভালো আম উৎপাদন করা সম্ভব হতো না। আর অতি ঘন পদ্ধতিতে লাইন হতে লাইন ৩ মিটার এবং গাছে থেকে গাছ ২ মিটার দেয়া হয়। ফলে এক হেক্টর জমিতে ১৬৬৭টি গাছ লাগানো হয়ে থাকে। এই বিশাল চাহিদাপূরণে অত্র এলাকায় গড়ে উঠেছে শত শত নার্সারি যেখানে গুণগত মানসম্পন্ন কলম উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। তবে কেউ কেউ ৩ মি.দ্ধ ৩ মি. অথবা ৪ মি. দ্ধ ৩মি. দূরত্বে আম বাগান করছেন। প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা গেছে নার্সারি মালিকগণ জমির মালিককে বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে, যত গাছ তত আম। অপরপক্ষে আম গবেষকগণ এবং আম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এখন অতি ঘন পদ্ধতিতে আম বাগান স্থাপনে পরামর্শ প্রদান করেন না কারণ আমাদের দেশে সবাই জানেন একবার আমগাছ লাগালে ৩০-৪০ বছর অনায়াসে আম উৎপাদন ও বিক্রয় করা যাবে।


এমনও অনেক চাষি আছে, যারা শুধুমাত্র আমের মৌসুমে বাগানে গমন করেন এবং বছরের অন্যান্য সময় আম বাগানে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। তবে বেশির ভাগ চাষি আম বাগানে শুধুমাত্র সার প্রয়োগ ও বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু অতি ঘন পদ্ধতির আম বাগানে ১২ মাস বাগান পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। যেমন সময়মতো সার প্রয়োগ, সেচপ্রয়োগ, প্রæনিং, ট্রেনিং, মরা ডালপালা অপসারণ ইত্যাদি। যদি কোন চাষি গাছ লাগানোর পর তিন বছর প্রুনিং না করে থাকেন তাহলে পরের বছরে আমের ফলন বাড়ার পরিবর্তে কমার সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে সঠিক জাত নির্বাচন করে অতি ঘন এবং ঘন পদ্ধতিতে আম বাগান স্থাপন করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।


পোরশা, সাপাহার, নাচোল, গোমস্তাপুর উপজেলার অনেক আম বাগান সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, নতুন বাগানগুলো আমগাছ রোপণের সাধারণ দূরত্ব অনুসরণ না করে ঘন ও অতি ঘন পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। সেক্ষেত্রে প্রতি হেক্টর জমিতে ১২০০ থেকে  ১৭০০ পর্যন্ত আমের কলম রোপণ করছেন। ফলে গাছ রোপণের ৩-৪ বছরের মধ্যেই একটি গাছ অন্য গাছের মধ্যে প্রবেশ করেছে। কোন কোন চাষি আম সংগ্রহ করার পর প্রুনিং, ট্রেনিং করে গাছগুলোকে ছোট রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে অধিকাংশ চাষির এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এসব আম বাগানে ২-৩ বছরের মধ্যে ভালো ফলন পাওয়ার পরিবর্তে ফলন কমার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। অতি ঘন পদ্ধতিতে আম বাগান করলে আম বাগান ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। আম গবেষক ও আম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ মনে করেন, এ সব চাষিদের এই মুহুর্তে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে, অল্প সময়ে ফলের চাহিদা মেটাতে ও আমের ফলন বাড়াতে এই ধরনের উদ্যোগ যুক্তিসংগত কিন্তু সঠিক নিয়মকানুন না জেনে অতিঘন পদ্ধতিতে আম বাগান করলে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি থাকে।


অতি ঘন পদ্ধতিতে স্থাপিত আম বাগান হতে ভালো ফলন পেতে করণীয়
প্রতি  বছর গাছের বয়সানুযায়ী সুষমমাত্রার সার প্রয়োগ করতে হবে। শুধুমাত্র রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করে সাথে পচা গোবর সার/ জৈবসার/ ভার্মিকম্পোস্ট/ ট্রাইকোকম্পোস্ট/ আবর্জনা পচা সার ব্যবহার করা উত্তম।
আম সংগ্রহ করার পরপরই প্রুনিং করতে হবে। তবে প্রয়োজন হলে ট্রেনিং করতে হবে।


নতুন পাতা বের হলে এ্যানথ্রাকনোজ রোগ এবং পাতাকাটা উইভিল পোকার আক্রমণ দেখা যায় সেক্ষেত্রে কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক ও মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রতিলিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে একত্রে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। অন্যথায় নতুন ডগাপাতা শূন্য হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। খরা মৌসুমে এবং সার প্রয়োগের পর পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।


অতি ঘন পদ্ধতিতে আম বাগানে পর্যাপ্ত আলো প্রবেশ করতে পারে না। ফলে হপার পোকা ও মাছি পোকার উপদ্রব বেশি হতে পারে। সেজন্য হপার পোকা যেন না থাকে সেজন্য ইমিডাক্লোপ্রিড/কার্বারিলগ্রুপের যে কোন ভাল কীটনাশক নির্দেশিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে এবং মাছি পোকা দমনের জন্য সঠিক সময় ও পদ্ধতি অনুসরণ করে ফ্রুটব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
এ ছাড়াও আম বাগানে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেজন্য আম গাছের পরিচর্যার মাস-পঞ্জি অনুসরণ করতে হবে।

 

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত¡ গবেষণা কেন্দ্র, বারি, গাজীপুর, মোবাইল: ০১৭১২১৫৭৯৮৯, ই-মেইল: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

বাজারে এখন আম সহজলভ্য। হিমসাগর, আম্রপালি, ল্যাংড়াসহ নানা প্রজাতির আমে ভরা বাজার। সবার ঘর এখন আমের ঘ্রাণে ম ম করছে। আম নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, আয়রণ, ক্যালসিয়াম ও খনিজ লবণসহ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান।

 

তবে জানেন কি, কিছু খাবার আছে, যা আম খাওয়ার পর কখনোই খাওয়া উচিত নয়। বদহজম, বমিভাব থেকে শুরু করে ডায়রিয়া, অ্যালার্জি এমনকি শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে আম খাওয়ার পর ভুল খাবার খেলে। অতিরিক্ত আম খাওয়া যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়; ঠিক তেমনই আম খাওয়ার পরে কিছু খাবার খেলে পড়তে পারেন মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।

পানি: ফল খাওয়ার পর পানি খেতে হয় না-এমন কথা নিশ্চয়ই বড়দের মুখে শুনেছেন! আমের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। আম খাওয়ার পর পানি খেলে ভুগতে পারেন অ্যাসিডিটির সমস্যায়। হতে পারে পেট ব্যথাও। তাই আম খাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা পর পানি পান করুন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমে প্রচুর হাইড্রেটিং শক্তি আছে, যা আপনার তৃষ্ণা নিবারণের জন্য যথেষ্ট। যদি আপনি ফল খাওয়ার পরেও তৃষ্ণার্ত বোধ করেন তবে কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর জল খান।

বেশিরভাগ চিকিত্সক এবং ডায়েটিশিয়ানরা ফল এবং পানি খাওয়ার মধ্যে ৪০-৫০ মিনিট ব্যবধানের পরামর্শ দেন। আপনি যদি বেশি তৃষ্ণার্ত বোধ করেন তবে ফল খাওয়ার ৩০ মিনিটের পর এক বা দুটি চুমুক পান করতে পারেন।

 

দই: আমের সঙ্গে ভুলেও দই মিশিয়ে খাবেন না। কারণ দই আর আম একসঙ্গে শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এতে অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। হতে পারে হজমের সমস্যাও। এমনকি পাকস্থলীতে বিষক্রিয়ার ফলে ডায়রিয়াও হতে পারে।

 

করলা: এই সবজির অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। তবে আম খাওয়ার পর কখনই করলা খাবেন না। খেলে বমিভাব হতে পারে। অনেকের বমির পাশাপাশি শ্বাসকষ্টও হতে পারে।

 

ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার: আম খাওয়ার পরপরই কখনও ঝাল কিংবা মশলাযুক্ত খাবার খাবেন না। এর ফলে হজমে সমস্যা দেখে দিতে পারে। ভুগতে পারেন অ্যালার্জিতেও।

 

কোমল পানীয়: স্বাস্থ্যের জন্য কোমল পানীয় মোটেও ভালো নয়। তারপর যদি আম খাওয়ার পরপর কোমল পানীয় খাওয়া হয়; তাহলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।

আম আর কোমল পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকায় রক্তে ব্লাড সুগারের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। যা ডায়াবেটিস রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে।

Saturday, 15 January 2022 19:18

খিরসাপাত আম Khirsapat Mango

Written by

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

খিরসাপাত/খিরশাপাত/ক্ষিরশাপাত/ক্ষীরশাপাত আম, উন্নতজাতের আমের মধ্যে অন্যতম।  জুন মাসের শুরু থেকেই এই আম পাকতে শুরু করে। আমটি আকারে গোলাকার আকৃতিতে মাঝারি। আমটি লম্বায় প্রায় ৮ সে.মি., প্রস্থে প্রায় ৭ সে.মি. ওজনে প্রায় ২৬৪ গ্রাম মতো হয়। খিরসাপাত আমের বোঁটা বেশ মোটা এবং শক্ত। ত্বক মসৃণ,পাকলে বাইরের ঊর্ধ্বাংশ অর্থাৎ বোঁটার আশপাশে হলুদ রং ধারণ করে। আমের মধ্যাংশ থেকে নিম্নাংশ হালকা সবুজ।  এর খাবার উপযোগী অংশ শতকরা ৬৭ দশমিক ২ ভাগ।  আঁশবিহীন আমটির শাঁস হলুদাভ। ফলটি সুগন্ধযুক্ত, রসালো ও অত্যন্ত মিষ্টি স্বাদের। মিষ্টি সুগন্ধ ও স্বাদের জন্য জনপ্রিয়তার দিক থেকে এ আমের স্থান শীর্ষে।

Saturday, 15 January 2022 19:17

আম কি ওজন বাড়ায়?

Written by

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না।

তবে আসল ব্যাপার হল মৌসুমি ফল আম দেহের নানান রকম পুষ্টির চাহিদা মেটায়। আর মোটা হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও ঠিক নয়।

‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় পুষ্টিবিদ পুজা মাখিজা বলেন, “আমে রেয়েছে ভিটামিন এ, সি, কপার এবং ফোলাট। আর চর্বির পরিমাণ মাত্র এক শতাংশ।”

আর এই ফল হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখার পাশাপাশি এর ভোজ্য আঁশ হৃদরোগ ও টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারাহ মাসুদা জানান-

পাকা আমে ক্যারোটিনের মাত্রা বেশি।

প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়। রয়েছে ১০৭ ক্যালরি, ৩ গ্রাম আঁশ, ২৪ গ্রাম শর্করা। এছাড়াও এতে রয়েছে ২৫৭ মি.গ্রা. পটাসিয়াম, ০.২ মি.গ্রা ভিটামিন বি-৬।

এতে ১.৩ গ্রাম আয়রণ, ১৪ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১৬ মি.গ্রা. ফসফরাস, ১৬ মি.গ্রা. ভিটামিন সি, ০.৯ মি.গ্রা. রিভোফ্লেভিন এবং ০.০৮ মি.গ্রা. থায়ামিন থাকে।

এছাড়াও পাকা আমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.১ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১ ও ০.০৭ মি.গ্রা. বি-২ রয়েছে।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে। এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন এবং ফ্যাটও পাওয়া যায়। যেমন প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে।

দৈনিক চাহিদার ২৫ শতাংশ ভিটামিন ‘এ’ এবং  ৭৬ শতাংশ ভিটামিন ‘সি’ আম থেকে মিলতে পারে।

পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে ফারাহ মাসুদা বলেন, “এর পুষ্টি উপাদান শরীরের নানাভাবে শক্তি জুগিয়ে ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে মানবদেহ সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।”

দৈনিক চাহিদার ২৫ শতাংশ ভিটামিন ‘এ পাওয়া যায় আমে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ‘এ’য়ের গুরুত্ব অপরিসীম। পাশপাশি কিডনি, যকৃত, হৃদপিণ্ড ও অন্যান্য অংগপ্রত্যঙ্গ সুস্থ রাখে সাহায্য করে।

- আমের ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে।

- কার্বোহাইড্রেইট কর্মশক্তি যোগায়।

- আমের আয়রন রক্ত শূন্যতা প্রতিরোধ করে।

- ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।

- আমে আছে দৈনিক চাহিদার ৭৬ শতাংশ ভিটামিন ‘সি। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।

- এর পটাশিয়াম রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।

- এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।

-আমে থাকা উন্নত ফ্যাটি অ্যাসিড হজম ক্রিয়া উন্নত করে।

- আমে থাকা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, আমের পলিফেনল স্তন ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধিকে বাঁধা দেয়। এছাড়াও, কোলন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়

‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় জেষ্ঠ্য পুষ্টিবিদ সৌম্য শতাক্ষী বলেন, “অতিরিক্ত আম খাওয়া ক্ষতিকরও হতে পারে। তাই এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।”

মনে রাখতে হবে দিনের শুরুতে আম খাওয়া উপকারী।

“কারণ খাবারের পরে আম খাওয়া সার্বিক ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি করে।”

তবে পুষ্টিবিদ পুজা মাখিজার মতে, আম তখনই ওজন বাড়াবে যদি তা অন্য কোনো কিছুর সঙ্গে মিলিয়ে খাওয়া হবে। যেমন- আমের মিল্কশেইক, আইসক্রিম বা ‘ম্যাঙ্গো অ্যান্ড ক্রিম’ ইত্যাদি।

পুজা পরামর্শ দেন, নাস্তা হিসেবে আম খাওয়া ভালো। ভারী খাবার হিসেবে নয়। দিনে একটা আম খাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আমের জুস বানিয়ে পান করতে চাইলে চিনি বা মিষ্টি না মেশালে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

Page 7 of 58