আম এমন একটি ফসল যা বংশ পরম্পরায় ভোগ করা যায়। আমগাছ কিম্বা আম বাগানের যে বিশেষ পরিচর্যায় প্রয়োজন, এবিষয়টি দেশের অধিকাংশ বাগান মালিকেরা বুঝতেন না। কিম্বা বুঝেও গুরুত্ব দিতেন না।

জোড় কলমের জন্য এক বছর বয়সের চারাগাছ সর্বোত্তম। এসকল চারাগাছকে কলম করার সময় আদিজোড় বা রুটস্টক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মাতৃগাছ থেকে নির্বাচন করা সায়ন সেক্ষেত্রে হবে উপজোড়।

আমগাছ রোপণের পর গাছগুলোর মধ্যেকার ফাঁকা অনেক অংশ রয়ে যায়। আমগাছের ডাল পালা বড় হতে এবং আশেপাশের ছড়িয়ে যেতে প্রায় ২৫-৩০ বছর সময় লেগে যায়। এই সময়টুকু কাজে লাগিয়ে নির্বিঘ্নে

আমের ফলন আমাদের দেশে বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। এর বাণিজ্যিক চাহিদা দিন দিন বহুগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমের ফলন বাড়াতে হলে কলমের চারা উৎপাদন আরও অধিক হারে বাড়াতে হবে। মানুষ এখন অনেক সচেতন।

যে গাছগুলো ফল দেয়া শুরু করেছে, এসকল গাছে কী পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হবে সেটি নির্ভর করবে গাছটির আকার, বয়স এবং নির্দিষ্ট স্থানটির মাটির উর্বরতার উপর। এব্যাপারে বাংলাদেশে বাস্তবভাবে পরীক্ষালব্ধ তথ্যের অভাব রয়েছে।

ভিনিয়ার কলম পদ্ধতিটি অত্যন্ত সফল। এটি জোড় কলম পদ্ধতির চেয়ে অনেক সহজ এবং কম শ্রম ব্যয় করতে হয়। আমের অঙ্গজ বংশ বিস্তারের এই পদ্ধতিটির জন্য এক থেকে দুই বৎসর বয়সী চারা আদিজোড়

আম খেতে কোনোটা মিষ্টি, কোনোটা টক। দেখতে কোনোটা লম্বা, কোনোটা গোল। নানা বৈচিত্র্যের জন্যই আমের এত চেহারা ও স্বাদ। এ দেশে আমের বৈচিত্র্যের শেষ নেই। গাছের জন্ম হয় প্রধানত দু’ভাবেন্ধ বীজের

অল্প সময়ে অধিক কলম উৎপাদনের জন্য স্টোন গ্রাফটিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিটিপ ফাটল কলমের মতোই। তবে স্টোন গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চারা বয়স ৮ থেকে ১২ মাস না হয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন বয়সের হয়ে থাকে।

আমের আঁটি ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ কারণে রোগমুক্ত পাকা আম থেকে আঁটি সংগ্রহ করে সাত দিনের মধ্যে প্রথম বীজতলায় ঘন করে বিছিয়ে ৫ .সে. মি. পুরু মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়।

রোপণ দূরত্ব নির্ভর করে আমের জাতের উপর। দ্রুত বর্ধনশীল আমের জাত বা বড় আকৃতির গাছ হলে (ফজলী আম বা রাণীপছন্দ, কোহিতুর) সাধারণত ১২ মিটার বা ৪০ ফুট দূরত্বে রোপণ করতে হয়।

আমগাছের শিকড় সাধারণত চতুর্দিকে প্রসারিত হয়ে থাকে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পর্যন্ত এর বিস্তৃত হয়ে থাকে। একারণে আমগাছ মাটি থেকে সহজেই তার প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করতে পারে।

আমের অঙ্গজ বংশবৃদ্ধির মধ্যে ফাটল কলম পদ্ধটি অপেক্ষাকৃত সহজ।এই পদ্ধতিটি ফিলিপাইনে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। প্রথম অবস্থায় ৮ থেকে ১২ মাস বয়সী নিরোগ সবল সতেজ চারা আদিজোড় হিসেবে বেছে নিতে হবে।

আমগাচের অঙ্গজ পদ্ধতিতে বা অযৌন পদ্ধতিতে বংশ বৃদ্ধি বহু প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। ঐতিহাসিকগণের ধারণা, বিহারের দ্বারভাঙ্গায় সম্রাট আকবরের পৃষ্ঠপোষকতায় পৃথিবীর সর্ববৃহৎ

আমের আঁটি বা বীজ থেকে চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলা তৈরি করতে হয়। বীজতলা দুই ধরনের। প্রথমটি আঁটি অঙ্কুরোদগমের জন্য ব্যবহৃত হয়। দ্বিতীয় বীজতলা টি অঙ্কুরিত চারা দুই বা চার সারিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে

অভিজ্ঞ শ্রমিক দ্বারা আম পাড়লে আমের গুণগত মান নষ্ট হবার ঝুকি কম থাকে। অপুষ্ট আম পাড়লে এবং অযত্নে আম পাড়লে গায়ে আঘাত লাগালে এর সংরক্ষণশীলতা এবং আহারোপযোগিতা অনেকাংশে কমে যায়।